একজন মুমিন মুসলমানের গল্প
একজন মুমিন মুসলমানের গল্প
বাদশার ছেলে অসুস্থ কোন চিকিৎসায় রোগ সারছে না ডাক্তার কবিরাজ মোল্লা মুনশি সবাই ফেল কারো চিকিৎসায় কাজ হচ্ছে না।
হটাৎ করে বাদশার মনে পড়লো নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি হাদিস, যার অর্থহলো মুমিন মুসলমানের জোটা খাবার খেলে রোগ থেকে সিফা পাওয়া যায়।
বাদশা সাথে সাথে রাজ্যের সকল বাহিনীকে হুকুম দিলেন যে খান থেকে পারো আমাকে একজন মুমিন মুসলমান এনে দাও। রাজ্যের সকল বাহিনীর সদস্যরা বেরিয়ে পড়লেন মুমিন মুসলমানের খুঁজে।
তারা প্রতিদিনই খুজ করতে আছেন কিন্তুু মুমিন মুসলমান তো পায় না। অনেক বড় বড় মুফতি মাওলানা মহাদিস,মূফাসির এদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে আপনি কি মুমিন মুসলমান,সবাই এককথা বলে আমি মুসলমান বঠে কিন্তুু মুমিন হতে পারিনি।
এভাবে কয়েক দিন যাওয়ার পর রাজ্যের সেনা সদস্যরা একটি পাহাড়ের উপরে গাছের নিচে বসে বিশ্রাম করতেছে। এমন সময় একজন লক্ষ করে দেখে গাছের গুঁড়ায় মাটির নিচে একজন মানুষ শুয়ে আছেন। যার চুল নখ ও শরীরে কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে।
তিনি তার সহপাঠীদের নিয়ে মাটি কেটে ঐ লোককে বের করলেন। বের করার পর মাটির নিচে থাকা ব্যক্তি বললেন। আমাকে কেন আপনারা মাটির নিচে থেকে বের করলেন।
সৈন্যরা জবাব দিলো আপনি অবৈধভাবে আমাদের রাজ্যে প্রবেশ করেছেন। তাই আপনাকে গ্রেফতার করা হলো। আপনি এখন আমাদের সাথে চলেন বাদশার দরবারে।
তিনি বললেন তাইলে চলেন সৈন্যরা উনাকে ঘোড়ার উপরে তুলে নিয়ে গেলো বাদশার দরবারে। দরবারে গিয়ে উনাকে বসিয়ে দেওয়া হলো খাবার। উনি খাবার সামনে পেয়ে বললেন আমিতো এতো খাবার খেতে পারবো না।
উজির বললেন ঠিক আছে আপনার যতটুকু মনে চায় ততটুকু খান। উনি বিসমিল্লাহ বলে এক লোকমা খেয়ে বললেন আর খেতে পারবো না। এদিকে উজির সাথে সাথে খাবারের প্লেট নিয়ে পাশে রুমে গিয়ে বিসমিল্লাহ বলে বাদশার ছেলে মূখে এক লোকমা খাবার দিলেন।
বাদশার ছেলে প্রায় ছয় মাস ধরে বিছানায় শুয়ে আছে। তিনি উঠতে পারেনি। যে-ই মাত্র উনার জোটা খাবার বিসমিল্লাহ বলে ছেলে মূখে দেওয়া হলো ছেলে বিছানা থেকে উঠে দাড়িয়ে গেলেন।
এদিকে ঐ ব্যক্তি বললেন আপনাদের বাদশা কে ডাকেন আমি চলে যেতে চাই। বাদশা এসে সালাম দিয়ে বললেন আমার কাজ হয়ে গেছে। ঐ লোক বললেন বাদশাহ জাঁহাপনা আমি আপনার রাজ্যের অনাধিকার প্রবেশ করেছি। আমাকে ক্ষমাকরে দেন।
বাদশা বললেন এরা আপনাকে মিথ্যা কথা বলে এখানে এনেছে। আমি তাদেরকে পাঠিয়ে ছিলাম তারা যেন আমাকে একজন মুমিন মুসলমান এনে দেয়ে। তাই তারা আপনাকে এখানে নিয়ে এসেছে।
বাদশার কথা শুনে ঐ লোক হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন আর বললেন বাদশারে আমি মুমিন মুসলমান হতে পারিনি তবে মুমিন মুসলমান দেখেছি। বাদশাহ চিন্তায় পড়ে গেলেন আর মনে মনে ভাবতে লাগলেন যার জোটা খাবার খেয়ে আমার ছেলে পুরাপুরি সুস্থ। আর উনি নিজেকে।
মুমিন মুসলমান হিসেবে মেনে নিতে রাজি নয়। আসল ঘটনা কি আমাকে জানতে হবে। বাদশাহ বললেন আপনি কিভাবে মুমিন মুসলমান দেখলেন। তখন ওই লোক বললেন আমি যখন সংসার ত্যাগ করে আল্লাহকে পাওয়ার আশায় ঘর বাড়ী ছেড়ে।
বেরিয়ে যাই অনেক দুর যাওয়ার পর দেখি একটি সাগরের বালু চরের মধ্যে দুজন লোক পশ্চিম দিকে ফিরে দেনমগ্ন অবস্থায় বসে আছেন। আমি গিয়ে তাদের পিছনে বসে পড়ি। এভাবে ১২ বছর পার হয়ে যায়।
হঠাৎ একদিন সাগরের মধ্যে জোয়ার উঠে প্রথমে আমাদের কোমর পর্যন্ত পানির নিচে ডুবে যায় তারপর আমাদের গলা পর্যন্ত পানির নিচে ডুবে যায়। তখন আমি দেখি অল্প কিছুকণের মধ্যে আমাদের পুরা শরীর পানির নিচে চলে যাবে।
তখন আমি বলে উঠি ইয়া আল্লাহ। ইয়া আল্লাহ বলার সাথে সাথে তারা দুজন একসাথে আমার দিকে ফিরে আমাকে দমক দিয়ে বলেন। দুর কাফির দূর হয় এখান থেকে তুই ইয়া আল্লাহ বলে কি আল্লাহকে সজাগ করিস আল্লাহ কি এসব দেখেনা।
তাদের ধমক খেয়ে আমি দৌড়ে পালাতে শুরু করি। আর পিছনে তাকিয়ে দেখি তাদেরকে জোয়ারের ঢেউ তলিয়ে নিয়ে গেছে । আমি এসে আপনার রাজ্যের এই গাছতলার নিচে শুয়ে পড়ি। আজকে এই গাছতলায় শোয়ার আমার ১২ বছর পূর্ণ হল ।
বাদশা রে, আমি মমিন মুসলমান হতে পারিনি কিন্তুু আমি এই তাদেরকে মুমিন মুসলমান হিসেবে দেখেছি। তারা আল্লাহ সিদ্ধান্তর উপরে এমন অনর আল্লাহ যা করেন তারা তাই মেনে নেন। তারাই প্রকৃত মুমিন মুসলমান।